স্বপ্নযোগে যেভাবে আযানের সূচনা হয়!


 
স্বপ্নযোগে যেভাবে আযানের সূচনা হয়!

 নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় হিজরত করার পর নামাজে জমায়েত হওয়ার ব্যাপারে সাহাবীদের নিয়ে পরামর্শ করলেন । সাহাবীগণ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের রীতি - কালচারের অনুকরণে ভিন্ন ভিন্ন পরামর্শ দিলেন । কেউ বললেন , নামাজের সময় হলে উঁচু স্থানে আগুন জ্বালাতে হবে , যা দেখে মানুষ বুঝতে সক্ষম হবে যে , নামাজের সময় হয়েছে । কেউ বললেন , পাহাড়ের উপরে উঠে  ( নামাজ , নামাজ ) বলে ঘোষণা দিতে হবে । কেউ বললেন , গলিতে গলিতে ' নামাজের ' ঘোষণা দিতে হবে । আবার কেউ বললেন , নাসারাদের ন্যায় ' নাকুস ' ( এক ধরণের ঘন্টা বাজিয়ে নামাজের আহবান করতে হবে । কেউ বললেন , ইহুদীদের ন্যায় শিঙ্গায় ফুৎকার দিতে হবে ।

 

 কিন্তু নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোনটাই পছন্দ করলেন না । বিষয়টি এভাবেই সিদ্ধান্তহীন রয়ে গেল । এমন সময় কোনো এক রাতে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ রাযি . এবং আরো কতিপয় সাহাবীকে ( বর্তমান প্রচলিত ) আযানের বাক্য ও কায়ফিয়াত স্বপ্নযোগে দেখানো হলো । তাঁরা এসে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি এটি অত্যন্ত পছন্দ করলেন । এরপর তিনি হযরত বিলাল রাযি . কে ডেকে এভাবেই আযান দেয়ার নির্দেশ দিলেন । ( বুখারী -৬০৩ , ৬০৫ , ৬০৭ , ৩৪৫৭ , ইফ -৫৭ , মুসলিম -৩৭৮ ) 

এর স্বপক্ষে সুনানে আবু দাউদে আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ রাযি . থেকে একটি দীর্ঘ হাদীসও বর্ণিত আছে,,


 عن عبد الله بن زيد رضي الله عنه قال : لما أمر رسول الله صلى الله عليه وسلم بالثاقوس يعمل ليضرب به الناس لجمع الصّلاة طاف بي وانا نايم رجل يخيل ناقوسا في يدو فقلت يا عبد الله أتبيع النّاقوس قال وما تضنع به فقلت تدعو به إلى الصلاة . قال أفلا أدلك على ما هو خير من ذلك فقلت له بلى . قال فقال تقول الله أكبر الله أكبر الله أكبر الله أكبر أشهد أن لا إله إلا الله أشهد أن لا إله إلا الله أشهد أن محمدا رسول الله أشهد أن محمدا رسول الله عى على الصلاة عي على الصلاة تي على الفلاح حي على الفلاح الله أكبر الله أنبولا إله إلا الله ,

 

অর্থ : হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ রাযি . থেকে বর্ণিত , তিনি বলেন । রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাতে লোকদেরকে জমায়েত করার উদ্দেশ্যে নাকুস বানানোর নির্দেশ দিলেন তখন আমি কোন রাতে ) স্বপ্নে দেখলাম যে , এক ব্যক্তি নাকুস হাতে আমার কাছ দিয়ে অতিক্রম করছে । আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম , তুমি ' নাকুসটি বিক্রি করবে কি ? সে বললো , তুমি এটা দ্বারা কী করবে ? আমি বললাম , এটি বাজিয়ে মানুষকে নামাজের জন্য জমায়েত করব । সে বললো , আমি তোমাকে এর চেয়ে উত্তম জিনিসের কথা এভাবে ) ঘোষণা করবে বলে দেব কি ? আমি বললাম , অবশ্যই । সে বললো , তুমি ( প্রতি নামাজের সময় এভাবে ) ঘোষণা করবে_ 

                      الله أكبر الله أكبر

                        الله أكبر الله أكبر

                    আল্লাহ সবচেয়ে বড় , আল্লাহ সবচেয়ে বড় । 

                      আল্লাহ সবচেয়ে বড় , আল্লাহ সবচেয়ে বড় ।

                   أشهد أن لا إله إلا الله 

                        أشهد أن لا إله إلا الله 

         

                     আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে , আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো ইলাহ নেই ,

                      আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে , আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো ইলাহ নেই । 

 

                           أشهد أن محمدا رسول الله

                           أشهد أن محمدا رسول الله

                             আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে , মুহাম্মাদ সা . আল্লাহর রাসূল ,

                         আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে , মুহাম্মাদ সা . আল্লাহর রাসূল ।

                         حي على الصلاة 

                            حي على الصلاة

                             তোমরা সালাতের দিকে এসো ,

                          তোমরা সালাতের দিকে এসো ।

                      حي على الفلاح 

                      حي على الفلاح 

                          তোমরা কামিয়াবির দিকে এসো ,

                          তোমরা কামিয়াবির দিকে এসো ।

                          الله أكبر الله أكبر

                         আল্লাহ সবচেয়ে বড় , আল্লাহ সবচেয়ে বড় । 

                           لا إله إلا الله

                             আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো ইলাহ নেই ।

 ( আবু দাউদ -৪৯৯ , ৫০২ , ৫০০ , ৫০৪ , তিরমিযী -১৮৯ , ইবনে মাজাহ্ -৭০৬ আহমাদ শব্দাবলী আবু দাউদের ) ১৪৯৫১ , ১৪৯৫৫ , ২৬৭০৮ , মিশকাত -৬৫০ , ইরওয়াহ -২৪৬ , দারিমী -১১৮৭ , হাদীসের শব্দাবলী আবু দাউদের )

 

 কুরআনে আযান সম্পর্কে বলা হয়েছে--

          واذا لاديشة إلى الصلاة اتخذوهاجروا وليبا ذلك بأنهم قوم لا يعقلون

অর্থ : আর যখন তোমরা নামাজের দিকে আহবান কর ( আযান দাও ) তখন তারা ( কাফিররা ) একে হাসি - তামাশা ও ক্রীড়া - কৌতুক বানিয়ে ফেলে । আর এর কারণ হচ্ছে , তারা এমন একটি সম্প্রদায় , যাদের বুদ্ধি - বিবেক কিছুই নেই । ( সুরা মায়িদা -৫৮ )

 

আযান শুনার সাথে সাথে নামাজের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ --

              

 يا أيها الذين آمنوا إذا لودي للصلاة من يوم الجمعة فاسعوا إلى ذكر الله السيح دالام خدا لكم إن كنتم تعلمون

অর্থ : হে মুমিনগণ ! যখন জুমু'আর দিনে নামাজের জন্য আহ্বান করা হয় ( আযান দেয়া হয় , তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ( নামাজের দিকে ) ধাবিত হও । আর বেচা - কেনা বর্জন কর । এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম , যদি তোমরা জানতে । ( সূরা জুমুআ -০৯ )

 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url