অজুর নিয়ত ও দোয়া | সহিহ হাদিসের আলোকে সঠিক অজু করার নিয়ম


অজুর নিয়ত ও দোয়া | সহিহ হাদিসের আলোকে সঠিক অজু করার নিয়ম



ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা, যেখানে পবিত্রতার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নামাজ, তাওয়াফ, কুরআন তিলাওয়াতসহ বহু ইবাদতের জন্য অজু অপরিহার্য। তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত অজুর নিয়ত ও দোয়া সঠিকভাবে জানা এবং হাদিসের আলোকে তা আমল করা। 





অজুর পরিচয় :
অজু হলো নির্দিষ্ট কিছু অঙ্গ নির্দিষ্ট নিয়মে ধৌত করার মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করা। কুরআনের নির্দেশ আল্লাহ তায়ালা বলেন: “হে মুমিনগণ! যখন তোমরা নামাজের জন্য দাঁড়াতে চাও, তখন তোমাদের মুখমণ্ডল ও কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত করো, মাথা মাসাহ করো এবং টাখনু পর্যন্ত পা ধুয়ে নাও।” 📖 (সূরা আল-মায়িদা: ৬)

অজুর নিয়তের গুরুত্ব (হাদিসের আলোকে)


নিয়ত কী?


নিয়ত হলো অন্তরের সংকল্প। অজুর নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা ফরজ বা সুন্নত নয়,


বরং মনে মনে ইচ্ছা করাই যথেষ্ট।


হাদিসের দলিল


রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,,


নিশ্চয়ই সব কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল।


(সহিহ বুখারি: ১, সহিহ মুসলিম: ১৯০৭)


এই হাদিস থেকে প্রমাণিত হয় যে, অজুর জন্যও নিয়ত থাকা আবশ্যক।


অজুর নিয়ত (আরবি ও বাংলা)


আরবি নিয়ত


نَوَيْتُ الْوُضُوءَ لِرَفْعِ الْحَدَثِ وَإِبَاحَةِ الصَّلَاةِ لِلّٰهِ تَعَالَى


বাংলা অর্থ


আমি আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য অজু করার নিয়ত করছি, যাতে পবিত্রতা অর্জন করে নামাজ আদায় করতে পারি।


নোট: এই নিয়তটি বলা বাধ্যতামূলক নয়; মনে মনে থাকলেই যথেষ্ট।


অজু শুরু করার দোয়া (বিসমিল্লাহ)


অজু শুরু করার আগে বিসমিল্লাহ বলা সুন্নত।


হাদিস


রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,,


যে ব্যক্তি অজু করার সময় আল্লাহর নাম স্মরণ করে না, তার অজু পূর্ণ হয় না।
(সুনানে আবু দাউদ: ১০১ – হাসান হাদিস)


দোয়া


بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
অর্থ: পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।



অজুর সঠিক পদ্ধতি (সংক্ষেপে হাদিস অনুযায়ী)


হজরত উসমান (রা.) অজু করে দেখিয়ে বলেন:


আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে এভাবেই অজু করতে দেখেছি। (সহিহ বুখারি: ১৫৯)


অজুর ধাপসমূহ:



  1. বিসমিল্লাহ বলা

  2. তিনবার হাত ধোয়া

  3. কুলি করা ও নাকে পানি দেওয়া

  4. মুখমণ্ডল ধোয়া

  5. কনুইসহ হাত ধোয়া

  6. মাথা মাসাহ

  7. কান মাসাহ

  8. টাখনুসহ পা ধোয়া



অজু শেষে দোয়া (সহিহ হাদিস)


অজু শেষ করে এই দোয়া পড়া অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।


আরবি দোয়া


أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ
اللّٰهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ التَّوَّابِينَ وَاجْعَلْنِي مِنَ الْمُتَطَهِّرِينَ


বাংলা অর্থ


আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিনি এক ও অদ্বিতীয়। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ ﷺ তাঁর বান্দা ও রাসূল।
হে আল্লাহ! আমাকে তওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন।


হাদিসের ফজিলত


রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:


“যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে অজু করে এই দোয়া পড়বে, তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেওয়া হবে।” (সহিহ মুসলিম: ২৩৪)



অজুর ফজিলত


১. গুনাহ মাফ হয়।


“অজু করলে বান্দার গুনাহগুলো তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থেকে ঝরে পড়ে। (সহিহ মুসলিম: ২৪৪)

২. কিয়ামতের দিন নূর হবে।


“আমার উম্মত কিয়ামতের দিন উজ্জ্বল মুখ ও অঙ্গ নিয়ে উঠবে অজুর কারণে।(সহিহ বুখারি: ১৩৬)

৩. অজু ঈমানের অংশ।



পবিত্রতা হলো ঈমানের অর্ধেক। (সহিহ মুসলিম: ২২৩)



উপসংহার:



অজুর নিয়ত ও দোয়া শুধু মুখে পড়ার বিষয় নয়, বরং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।


কুরআন ও সহিহ হাদিসের আলোকে অজু করলে তা আমাদের গুনাহ মাফের কারণ হয়


এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম হয়। তাই আমাদের উচিত সুন্নাহ অনুযায়ী অজু করা


এবং প্রতিটি দোয়া গুরুত্ব সহকারে আদায় করা।





____________________________________________post tag__________________________________________

অজুর নিয়ত ও দোয়া,

অজুর দোয়া,

অজুর নিয়ত,

অজু করার নিয়ম,

অজু শেষে দোয়া,

অজু শুরুর দোয়া,

অজুর ফজিলত,

সহিহ হাদিস অজু,

নামাজের অজু,

ইসলামিক দোয়া বাংলা

ojur niyat,

ojur niot,

ojur doa,

ojur dua,

hossain islamic tips,

hossainislamictips



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url